অপ্রিয় বচন
মহান পেশা বেচে নিয়ে একজন লেখাপড়া জানা মানুষ শিক্ষক হয়ে
নিশ্চই ভুল করেনি। কিন্তু, আজ দেখা যাচ্ছে এর উল্টো। হয়তবা সে ভুলেই করেছে। সারা
জীবনের অংকে যোগবিয়োগে ভুল। পাঁচ, সাত, দশ এমনকি পনের বছর মহা মূল্যবান সময় কেটে
যাচ্ছে বিনা বেতনে। জীবনের সাধ আহ্লাদ বর্জন করে মহান পেশায় নিজেকে উৎসর্গ করে
দিয়েছেন অনেকেই। অনেকেই ছাতি লাঠি নিয়ে বিদায় হয়েছেনেও। কিন্তু আমরা আজ সেই
অবস্থায় নেই। গর্ব করে বলতে পারি, আমরা আজ যে দেশে বাস করি সত্যি এটি ডিজিটাল
বাংলাদেশ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আধুনিকতা ও ডিজিটালের ছোঁয়া লেগেছে। আমরা আজ পিছিয়ে
নই। শিক্ষা যদি এগিয়ে যাচ্ছে, তবে শিক্ষকের বেলায় কেন নয়? পরিপত্র জারি হয়েছে,
শিক্ষক প্রাইভেট কোচিংয়ের সাথে জড়িত থাকতে
পারবেন না। থাকলে তাঁর বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভালো কথা, একজন এমপিওভূক্ত
শিক্ষক না পড়ালেও চলবে। কিন্তু একজন নন-এমপিও শিক্ষক স্কুল থেকে পাবেন
নামকাওয়াস্তে, সরকার থেকেতো পানেই না। তাহলে উনি কি করে পাঠদান করবেন? কি করে
প্রতিষ্ঠানেইবা যাবেন? এই প্রশ্ন কার কাছে রাখবো? কে শুনবে এই আকুতি ভরা প্রশ্ন? জানি,
এগুলো অপ্রিয় বচন। সব সময় সত্যি কথাটা আবার মুখের উপর বলতে নেই। কিন্তু ওঁরাতো
পনের টাকা কেজি দরের ওএমএস চাল নিতে লাইনে দাঁড়াতে পারেনা! শত হলেওতো শিক্ষক নামের
সীলটা উনাদের গায়ে পরেছে। অনেকেই বলছেন, জাতীয়করণ হলেতো আপনারা এমনিতেই এমপিওভূক্ত
হবেন। এ যেন মরার পরে বেহেস্ত পাওয়ার মতো অবস্থা। দেশে প্রায় এক লাখ পঁচিশ হাজার
নন-এমপিও শিক্ষক রয়েছেন। সবাই আশায় বুক বেঁধে আছেন। আমরাও একদিন এমপিওভূক্ত হবো।
সুখ স্বাচ্ছন্দে জীবন জীবীকা নির্বাহ করবো। ভদ্রলোকের লেবাসের ভেতরের অভাবী
মানুষটা একদিন পেটভরে দুমুঠো খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবেন। ঈদ-পূজা সহ বিভিন্ন
ধর্মীয় উৎসবগুলো আর যন্ত্রণার হয়ে উঠবে না। নন-এমপিও নামটি মুছবে। অর্থমন্ত্রীর
ভাষায়ও শুনতে হবেনা, নন-গভার্নমেন্ট সেকেন্ডারী এডুকেশন ইজ রাবিশ।
0 Comments